গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ ঐকমত্য কমিশনের
 
		
		
		
		
		ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সুপারিশ জমা দিয়েছে। কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজ সংবাদ সম্মেলনে জানান, কমিশন চায় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সাংবিধানিক পরিবর্তন কার্যকর হোক।
আলী রীয়াজ বলেন, সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যেন জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আদেশ জারি হওয়ার পর সরকার যে কোনো সময় গণভোটের তারিখ নির্ধারণ করতে পারবে। তিনি বলেন, “প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণের ক্ষমতাই যেন প্রয়োগ হয়— আমরা সেই লক্ষ্যেই প্রস্তাব করেছি।”
তিনি জানান, কমিশনের একটি বিকল্প প্রস্তাবও রয়েছে। সেটিতে বলা হয়েছে, সরকার একটি আদেশের মাধ্যমে গণভোট আয়োজন করতে পারে, যেখানে একটি মাত্র প্রশ্ন থাকবে। ওই আদেশের তফসিলে উল্লিখিত ৪৮টি বিষয় অন্তর্বর্তী সরকার বিল আকারে প্রস্তুত করে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
আলী রীয়াজ বলেন, গণভোটে জনগণের সম্মতি পেলে সেই বিল সংবিধান সংস্কার পরিষদের কাজে সহযোগিতা করবে। পরিষদ জুলাই সনদের চেতনা অনুসারে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন বা পরিবর্তনের কাজ করবে। যদি পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারে, তবে গণভোটে অনুমোদিত বিলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদে প্রতিস্থাপিত হবে।
তিনি জানান, পরিষদ জাতীয় সংসদের সদস্যদের নিয়েই গঠিত হবে। তবে তারা সংসদ সদস্য ও পরিষদের সদস্য হিসেবে আলাদা শপথ নেবেন। পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনায় স্পিকার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পিকার বা নির্ধারিত প্যানেল সদস্য সভায় সভাপতিত্ব করবেন।
আলী রীয়াজ বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, সংবিধান সংস্কার পরিষদ তাদের দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করতে পারবে। জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের যে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে, সেটিই রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি করেছে।”
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের কাঠামো নির্ধারণে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে একটি বিশেষজ্ঞ দলের সহযোগিতা নিয়েছে। দলে ছিলেন সাবেক বিচারপতি, আইনজীবী ও একজন আইন শিক্ষক। রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ এবং কমিশন সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে এই সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে, যাতে জুলাই সনদ ভবিষ্যতের রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ার আইনি ভিত্তি পায়।
মন্তব্য করুন







