logo
  • শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

 গণভোট ও আদেশের মাধ্যমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়ন করবে আগামী সংসদ

অনলাইন ডেস্ক
  ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৯
জাগতিক

সংবিধানসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ কার্যকর করতে যাচ্ছে একটি বিশেষ আদেশ ও গণভোটের মাধ্যমে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হবে।

প্রস্তাবিত আদেশটির নাম হবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ–২০২৫’, যা ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে “জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের” প্রতিফলন হিসেবে জারি করা হবে। এই আদেশের মাধ্যমে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থায় সংস্কারের কাঠামো নির্ধারণ করা হবে।

কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, আগামী জাতীয় সংসদ তার প্রথম ২৭০ দিন (নয় মাস) সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে। গণভোটে অনুমোদিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো এই সময়ের মধ্যে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন না হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।

তবে সময়সীমার মধ্যে সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব না হলে বিকল্প প্রক্রিয়ার কথাও কমিশন উল্লেখ করেছে। যদিও বিকল্পটির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি, আলোচনায় এমন একটি প্রস্তাব ছিল যে সরকার ‘সংবিধান সংশোধনী বিল’ আকারে সংস্কার খসড়া তৈরি করে তা গণভোটে উপস্থাপন করবে।

গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, ও মো. আইয়ুব মিয়া। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের খসড়া প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক মতামত দেন।

প্রস্তাবিত আদেশের পটভূমিতে বলা হবে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র–শ্রমিক–জনতার সফল গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রকাশ ঘটে, যার ফলশ্রুতিতে ৫ আগস্ট তৎকালীন কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন হয়। এই সরকারই এখন সংস্কার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি জুলাই জাতীয় সনদে এখন পর্যন্ত ২৫টি দল ও জোট সই করেছে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংস্কার বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পেয়ে সই করেনি।

গণভোটে সংস্কার প্রস্তাবগুলো দলীয় ভিন্নমত ছাড়াই উপস্থাপন করা হবে। ভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত সংস্কার প্রস্তাবগুলোই হুবহু বাস্তবায়িত হবে। গণভোট জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একসঙ্গে হবে নাকি আগে অনুষ্ঠিত হবে—সে সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের এই প্রক্রিয়া এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক আলোচনা ও জনগণের গণ–আকাঙ্ক্ষা বাস্তবে রূপ পায়। এর মাধ্যমে দেশে সুশাসন, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
আগামীকালকের মধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির দাবি জামায়াতের
অফিসে শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বহাল, জুলাই সনদে ক্ষুব্ধ বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকার কোনো আদেশ জারির ক্ষমতা রাখে না
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অযৌক্তিক, অবিবেচনাপ্রসূত
12