logo
  • সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলপথ অবরোধ, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে আহত ২০

অনলাইন ডেস্ক
  ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪৪

‘জেলা জেলা জেলা চাই, ভৈরব জেলা চাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, কিশোরগঞ্জ নো মোর’, ‘ইন্টারিম সরকার জেলা মোদের দরকার’—এমন স্লোগানে আজ সোমবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে ভৈরবের রেলপথ। জেলা ঘোষণার দাবিতে স্থানীয় জনতা নোয়াখালী থেকে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন লাল নিশান টানিয়ে আটকিয়ে রাখেন এবং সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন।

যাত্রীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও রেলওয়ে পুলিশ যখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেন, তখন বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে আশুগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রী **জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)**সহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

অবরোধের কারণে পাঁচটি ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়। ভৈরবে দীর্ঘ সময় আটকে ছিল কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহী ট্রেন আটকে ছিল নরসিংদীর দৌলতকান্দি স্টেশনে। এছাড়া তিতাস ট্রেন মেথিকান্দা স্টেশনে, কর্ণফুলী ট্রেন খানাবাড়ি স্টেশনে এবং চট্টলা ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তালশহর স্টেশনে আটকে ছিল। কর্ণফুলী ট্রেন ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে।

গত ১১ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে কিশোরগঞ্জ জেলাকে ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণার পর থেকেই ভৈরববাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর থেকে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। আন্দোলনে অংশ নেন স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, ছাত্রশিবির, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন, ছাত্রনেতা মোহাম্মদ জাহিদুল, মওলানা শাহরিয়ার, গোলাম মহিউদ্দিনমুহাম্মদ জুনায়েদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, “১৫ দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালানোর পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দাবির প্রতি কোনো সাড়া দেয়নি। তাই আমরা ২৬ অক্টোবর সড়কপথ, ২৭ অক্টোবর রেলপথ এবং ২৮ অক্টোবর নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। যদি সরকার দ্রুত ভৈরবকে জেলা ঘোষণা না করে, তাহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

পাথর নিক্ষেপের বিষয়ে ছাত্রনেতা শাহরিয়ার বলেন, “আমাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করে যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছি।”

রেলওয়ে থানার ওসি সাইদ আহমেদ জানান, “স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত চলছে, দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ ইউসুফ মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রেন থামিয়ে রেললাইনের পাথর ও ইট নিক্ষেপের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12