স্বাস্থ্যসেবায় অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ সরকারি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের নামে আর্থিক অনিয়ম, রোগীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মানহানিকর কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. এস. এম. তানজিরুল ইসলাম (রায়হান) এর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, সোমবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তেলুঞ্জিয়া গ্রামের শিলা সাংমা তাঁর স্বামীর ছোট বোন বিধবা নিঃসন্তান রুহিলি রেমাকে (৬০) হাঁটুর ব্যথার চিকিৎসা নিতে উপজেলার সোমেশ্বরী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার রায়হানের কাছে যান। সেখানে ৪০০ টাকা ভিজিট নিয়ে রোগী দেখে রক্ত পরীক্ষা, পায়ের এক্সরে, কোমরের এক্সরে করার নির্দেশনা দেন। পরে যে পরীক্ষাগুলো তিনি নিজেই পরিচালনা করেন। তবে প্রাতিষ্ঠানটি নীতিমালা অনুযায়ী ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার জন্য অনুমোদিত নয় বলে জানা যায়।
এছাড়াও, হাঁটুতে ইনজেকশনের জন্য ডাঃ রায়হান ১,৫০০ টাকা নেন, যেখানে বাহিরের ফার্মেসিতে দাম মাত্র ১২০ টাকা! অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কারণ জানতে চাইলে “ডাক্তার সাহেব জানেন” বলেন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার আব্দুল সালাম গনি।
ভুক্তভোগী শিলা সাংমা অভিযোগ করে বলেন, “আমি যখন ইনজেকশনের খরচের ভাউচার চাই, তখন ডাক্তার ও ম্যানেজার উভয়েই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আমাকে খুবই অশ্লীল অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এমনকি খুন-জখমের হুমকি দেন। এছাড়াও ডাক্তার রায়হান নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন, যা একজন নারী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে তাঁর জন্য চরম মানহানিকর!
প্রত্যক্ষদর্শী লুৎফর জ্জামান ফকির বলেন, “একজন সরকারি ডাক্তার হয়ে দুঃখী অসহায় ব্যাক্তিদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার পরির্বতে অশালীন-মানহানিকর আচরণ মোটেও কাম্য নয়। জনগণের ট্যাক্সে একজন সরকারি ডাক্তারের বেতন ভাতা হয়। আর তাদের সাথেই এ ধরনের কর্মকান্ড সংগঠিত হয় তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। আর এমন ব্যক্তির ডাক্তার হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগে স্থান হতে পারে না। কাজেই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।
অভিযুক্ত ডা: এসএম তানজিরুল ইসলাম রায়হান বলেন “একই সময়ে প্রথমবার ৪০০ টাকা ভিজিট নেয়ার পর পূর্ণরায় ১৫০০ টাকা ভিজিট নেয়া প্রসিডিউরে নেয়ার নিয়ম আছে। আইন অনুযায়ী ই সেটা নেয়া যায়।”
এদিকে ডাঃ রায়হানের অসদাচরণ ও সোমেশ্বরী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও জেলা সিভিল সার্জন বরাবর অভিযোগ জানান ভুক্তভোগী শিলা সাংমা ও তার পরিবার।
নেত্রকোনা সিভিল সার্জন বলেন, “দুর্গাপুর থেকে বিষয়টি আমাকে অবহিত করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করে তদন্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
মন্তব্য করুন