যে ৩ কারণে হত্যা মামলা থেকে ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতির সুপারিশ

জুলাই আন্দোলনের সময় বিএনপি কর্মী শ্রাবণ হত্যার মামলায় অভিনেতা ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ রোমন গত ৯ অক্টোবর আদালতে এ সংক্রান্ত অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে ইরেশ যাকেরের পাশাপাশি ফোরথট পিআর-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকরাম মঈন চৌধুরীকেও অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। দুজনই বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির সঙ্গে যুক্ত।
তদন্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ রোমন জানান, “প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইরেশ যাকের ও ইকরাম মঈনের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে পুনরায় প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন মিরপুর এলাকায় ছাত্রজনতার মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। গুলিতে বিএনপি কর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ আহত হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান।
শ্রাবণের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত শুনানি শেষে মিরপুর থানাকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এই মামলায় মোট ৪০৭ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, ওবায়দুল কাদের, শামীম ওসমানসহ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও নির্বাচন কমিশনার।
তদন্ত প্রতিবেদনে ইরেশ যাকের ও ইকরাম মঈনের অব্যাহতির পক্ষে তিনটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে—
১. কোনো প্রত্যক্ষদর্শী তাঁদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা বলেননি।
২. ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের উপস্থিতির কোনো ছবি বা ভিডিও পাওয়া যায়নি।
৩. মামলার ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততার কোনো দলিল বা প্রমাণ মেলেনি।
বাদী মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ভাইয়ের মৃত্যুর পর শুভাকাঙ্ক্ষীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলা করেছি। কেউ নির্দোষ হলে আদালত নিশ্চয়ই তা বিবেচনা করবে। ভাইয়ের হত্যার বিচারই আমার একমাত্র লক্ষ্য।”
এদিকে, মামলায় পরিচিত ব্যক্তিদের নাম আসায় শুরু থেকেই সমালোচনা হচ্ছিল। গত ২৮ এপ্রিল পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ইরেশ যাকেরের নামে হত্যা মামলা হওয়াকে ‘বিরক্তিকর’ বলে মন্তব্য করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে পুলিশ সঠিক তদন্ত করবে।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মামলার অন্যান্য আসামিদের বিষয়ে তদন্ত এখনো চলছে। নতুন প্রমাণ মিললে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন