ছলছুতোয় রাজধানীর সড়ক অবরোধ করলেই অ্যাকশন
প্রধান সম্পাদক : সৈয়দ আশিক রহমান
রাজধানীর রাজপথে হঠাৎ সড়ক অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি আর সহ্য করবে না সরকার। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে হঠাৎ রাস্তা দখল করে চলাচলে বাধা সৃষ্টি করাকে ‘অযৌক্তিক’ মনে করছে প্রশাসন। তাই এবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সড়কে নামার সঙ্গে সঙ্গেই অবরোধ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ইতোমধ্যে ডিএমপিকে এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলীকে ‘আইন অনুযায়ী কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন,
“যে কেউ যখন-তখন রাস্তা অবরোধ করে চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।”
তবে তিনি এটিও বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে যদি কেউ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে, তাহলে ডিএমপি সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে।
সরকার গঠনের পর রাজধানীতে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও হঠাৎ সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তার মতে, পুলিশের সহনশীলতা এবং বারবার অনুরোধকে দুর্বলতা হিসেবে দেখছে বিভিন্ন পক্ষ। তাই এবার 'ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে', এমন মন্তব্য করেছেন নীতিনির্ধারকরা।
সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম ও এবি পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ডিএমপি ইতোমধ্যে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করেছে। সড়ক অবরোধের নামে জনদুর্ভোগ যেন না হয়—সে বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই মতবিনিময় করছে সরকার।
দলগুলো থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
ডিএমপি জানিয়েছে, রাজধানীতে ৪০টি মাঠ চিহ্নিত করা হয়েছে সভা-সমাবেশের জন্য। এর মধ্যে রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বিভিন্ন থানাভিত্তিক মাঠ। মাঠগুলোর অবস্থা পরিদর্শন শুরু করেছে ডিএমপি, যা নিয়ে শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে।
ডিএমপির পরিকল্পনা অনুযায়ী:
-
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেবল ছুটির দিনে সমাবেশ করা যাবে
-
কর্মদিবসে কোনো অবস্থাতেই সেখানে কর্মসূচি নয়
-
রাস্তায় সমাবেশ না করে নির্ধারিত মাঠগুলোতে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হবে
ডিএমপি ইতোমধ্যে কয়েকটি এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এগুলো হলো:
-
আগারগাঁওয়ের এনবিআর ও বিডা কার্যালয় এলাকা
-
সচিবালয় সংলগ্ন এলাকা
-
যমুনা টাওয়ার আশপাশ
কঠোর অবস্থানের প্রথম স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে গত রোববার। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ জলকামান, লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশের দাবি, এই পদক্ষেপ জনদুর্ভোগ রোধেই নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন
