বিএনপির সভায় ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’, ছাত্রদল নেতার মাইক কেড়ে নেওয়া, বিতর্কে প্রহলাদপুর কমিটি

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুরে বিএনপির পথসভায় এক ছাত্রদল নেতা তার বক্তব্যে ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’ জানানোয় ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বক্তব্য শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই তার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা। পরে ওই নেতাকে মঞ্চ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

শুক্রবার (২০ জুন) রাতে এ ঘটনার ৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বিতর্কিত ওই ছাত্রদল নেতা নাহিদ হাসান, প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, নাহিদ বলেন:

“স্থানীয় প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সবাই আমার...”—এরপরই তার হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর নাহিদের অতীত রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও বিতর্ক সামনে আসে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, তিনি আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকি গাজীপুর-৩ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের ছবিসহ তার নামযুক্ত ছাত্রলীগের পোস্টারও ভাইরাল হয়েছে।

নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

কমিটি নিয়ে বিতর্ক: ‘বিশেষ সুবিধায় পদ পেয়েছেন’ দাবি নেতাকর্মীদের

স্থানীয় ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, প্রহলাদপুর ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণায় স্বচ্ছতা ছিল না। একজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীকে, তার অতীত পরিচয় জেনেও, ‘বিশেষ সুবিধার’ বিনিময়ে ছাত্রদলের সভাপতি করা হয়েছিল। যদিও এলাকায় তার ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট নানা পোস্টার ও ফেস্টুন আগে থেকেই প্রচারিত ছিল।

প্রহলাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জনি সিকদার বলেন,

“২০২৩ সালের শুরুর দিকে কমিটি দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় নাহিদ সংগঠনের জন্য কাজ করেছে, কর্মীদের পাশে থেকেছে। তবে সে ছাত্রলীগ করত এমন তথ্য সে নিজে কখনো স্বীকার করেনি।”

গঠনতন্ত্রের বাইরে কমিটি নয় দাবি সংগঠনের শীর্ষদের

শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম সরকার বলেন,

“কমিটি একা আমি করিনি। আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দুজনের স্বাক্ষরেই কমিটি হয়েছে। এখন ঘুরেফিরে আমাকেই দোষ দেওয়া হচ্ছে। নাহিদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে, সে জবাব দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিয়াউল করিম রিফাত মোড়ল বলেন,

“চার-পাঁচ মাস আগে দেওয়া একটি বক্তব্য এখন সামনে এসেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”