logo
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

চীনের সহায়তায় হারানো এলাকা পুনর্দখলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

অনলাইন ডেস্ক
  ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩০
ছবি : সংগৃহীত

চীনের সহায়তা নিয়ে ফের শক্তিশালী হয়ে উঠছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। দেশটির উত্তরে টানা বিমান হামলা চালিয়ে তারা বিদ্রোহীদের দখলে থাকা অঞ্চলগুলো পুনর্দখল করছে। এতে যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তির ভারসাম্য স্পষ্টভাবে জান্তার পক্ষে চলে গেছে।

মাসের পর মাস লড়াই শেষে টা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) কিয়াউকমে শহর দখল করলেও, সেনাবাহিনী মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই শহরটি পুনর্দখল করে নেয়। তবে শহরটিকে এর জন্য দিতে হয়েছে ভয়াবহ মূল্য। টানা বিমান হামলায় কিয়াউকমের বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। যুদ্ধবিমান থেকে ৫০০ পাউন্ড বোমা নিক্ষেপ, ড্রোন ও আর্টিলারি হামলায় আশপাশের ঘাঁটিগুলোরও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

টিএনএলএর মুখপাত্র তার পার্ন লা বলেন, “এ বছর সেনাবাহিনীর সৈন্য, ভারী অস্ত্র ও বিমান শক্তি অনেক বেড়েছে। আমরা যতটা পারি প্রতিরোধ করছি।” এর কিছুদিন পর সেনারা হিসপাও শহরটিও দখল করে নেয়, যার ফলে চীনা সীমান্ত পর্যন্ত প্রধান সড়ক পুরোপুরি জান্তার নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সাফল্যের পেছনে চীনের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে। বেইজিং প্রকাশ্যে জান্তার আসন্ন নির্বাচনের পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে। নির্বাচনের অজুহাতে সেনাবাহিনী দেশজুড়ে অঞ্চল পুনর্দখলের চেষ্টা করছে। চীন থেকে পাওয়া উন্নত ড্রোন ও প্রযুক্তিই তাদের বড় সুবিধা এনে দিয়েছে।

আগে বিদ্রোহীরা সস্তা ড্রোন দিয়ে এগিয়ে ছিল। কিন্তু এখন জান্তা বাহিনী চীন থেকে হাজার হাজার উন্নত ড্রোন কিনে ব্যবহার করছে। এমনকি মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে বোমা বর্ষণও করছে। চীন ও রাশিয়ার সরবরাহকৃত অস্ত্রের হামলায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু বাড়ছে। চলতি বছর অন্তত এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। শতাধিক জনগণের প্রতিরক্ষা বাহিনী (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র দল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অনেকের হাতে পর্যাপ্ত অস্ত্র নেই, কেউ কেউ জাতিগত স্বায়ত্তশাসনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে—ফলে ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের অভাব স্পষ্ট।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে তিনটি গোষ্ঠীর জোট সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে “অপারেশন ১০২৭” শুরু করেছিল। তখন তারা ১৮০টিরও বেশি সেনা ঘাঁটি দখল করে নেয়। কিন্তু সেই শক্তি এখন ভেঙে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মরগান মাইকেলস বলেন, “তখন দুটি ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল— বিদ্রোহীরা একীভূত, এবং সেনাদের মনোবল ভেঙে গেছে। বাস্তবে তা হয়নি।”

এদিকে, এসিএলইডি বিশ্লেষক সু মন জানান, জান্তার ড্রোন হামলা এখন প্রায় অব্যাহত। চীনের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও প্রযুক্তি রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বিদ্রোহীরা নতুন ড্রোন সংগ্রহে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে তাদের প্রতিরোধ ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে, আর জান্তার হাতে যুদ্ধক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
চীনের আমন্ত্রণে আগামী বছর বেইজিং সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প
চীনের ওপর ট্রাম্পের অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা
রাফাল নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের বিস্ফোরক মন্তব্য
বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশা চীনের, নতুন সরকারের সঙ্গে কাজের আগ্রহ
12