logo
  • মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২

শিরোনাম

  •     ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত কারও কষ্টের জন্য বিনা শর্তে ক্ষমাপ্রার্থী” — টকশোতে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
  •     আমীর খসরু নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি
  •     ছলছুতোয় রাজধানীর সড়ক অবরোধ করলেই অ্যাকশন
  •     ‘যুদ্ধের ইতি আমরাই টানব’ - ট্রাম্পকে কড়া হুশিয়ারি ইরানের
  •     ইসরায়েলকে হামলা বন্ধ করতে বলবেন না ট্রাম্প

রুহুল্লাহ খামেনিকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন

অনলাইন ডেস্ক
  ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৯:১২
সংগ্রহীত

ইতিহাসের কী নির্মম পরিহাস! যাকে পৃথিবী থেকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিলেন ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেন, তাকেই শেষ পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেননি। বরং সেই নেতা—ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পুরোধা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনি—বেঁচে যান, চালিয়ে যান আন্দোলন, প্রতিষ্ঠা করেন ইসলামি শাসন।
অন্যদিকে ভয়াবহ পরিণতির শিকার হন সাদ্দাম নিজেই।

১৯৭০-এর দশকে ইরাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। সেই সময় ইরানের তৎকালীন রাজা শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভিকে একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব দেন তিনি—নির্বাসিত ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ খামেনিকে হত্যা করার প্রস্তাব।

তৎকালীন ইরাকে অবস্থান করা খামেনি ইমাম আলী (রা.)-এর মাজারসংলগ্ন নাজাফ শহরের এক সাধারণ ঘরে বসে পাহলভি শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী ভাষণ রেকর্ড করতেন ক্যাসেট টেপে। পরে সেই টেপগুলো গোপনে সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে পৌঁছে দেওয়া হতো। বাজার, মসজিদ ও শিক্ষাঙ্গনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে এসব বার্তা, যা তখনকার ইরানে বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

সাদ্দাম হোসেন তখন আশঙ্কা করছিলেন, খামেনির উপস্থিতি ইরাকের শিয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্রোহ উসকে দিতে পারে। তাই তিনি চাইছিলেন খামেনিকে সরিয়ে দিতে।
খবরে জানা যায়, জাতিসংঘের এক গোপন বৈঠকের মাধ্যমে সাদ্দাম শাহ পাহলভিকে এই প্রস্তাব দেন। তবে শাহ সেই প্রস্তাবে সায় দেননি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ধর্মগুরুদের হত্যা তাদের কাজ নয়। পরিবর্তে তিনি অনুরোধ করেন, খামেনিকে যেন ইরাক থেকে বের করে দেওয়া হয়।

অনেকে শাহের এই সিদ্ধান্তকে নৈতিকতা হিসেবে দেখেন, আবার কেউ বলেন, তিনি নিজেকে আধুনিক নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন—একজন ‘মাফিয়া শাসক’ হিসেবে নয়।

অবশেষে ১৯৭৮ সালে ইরান সরকারের চাপে পড়ে খামেনিকে ইরাক থেকে বহিষ্কার করেন সাদ্দাম। তবে এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। কারণ, ফ্রান্সে নির্বাসিত হয়ে খামেনি আরও বড় প্ল্যাটফর্ম পান—গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সমর্থন। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে ঘটে যায় ইতিহাস বদলে দেওয়া ঘটনা—ইরানে শাহের পতন।

বিপ্লবের সেই নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ফিরে আসেন স্বদেশে। আর তার নেতৃত্বেই প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।
অন্যদিকে সাদ্দাম হোসেনের ক্ষমতার রাজপথ শেষ হয় অত্যন্ত করুণভাবে—যুক্তরাষ্ট্রের হাতে গ্রেপ্তার, বিচারে মৃত্যুদণ্ড এবং নির্মম ফাঁসি।

ইতিহাস হয়তো এভাবেই নির্মমভাবে নিজের সিদ্ধান্ত আমাদের সামনে মেলে ধরে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12