logo
  • মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ আশ্বিন ১৪৩২

শিরোনাম

  •     ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত কারও কষ্টের জন্য বিনা শর্তে ক্ষমাপ্রার্থী” — টকশোতে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
  •     আমীর খসরু নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি
  •     ছলছুতোয় রাজধানীর সড়ক অবরোধ করলেই অ্যাকশন
  •     ‘যুদ্ধের ইতি আমরাই টানব’ - ট্রাম্পকে কড়া হুশিয়ারি ইরানের
  •     ইসরায়েলকে হামলা বন্ধ করতে বলবেন না ট্রাম্প

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছে

জাগতিক ডেস্ত

  ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চ্যালেঞ্জপূর্ণ অর্থনীতি সামলাতে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার দ্য ডেইলি স্টার- দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেখতে পায় অর্থনীতির অবস্থা ধারণার চেয়েও খারাপ ছিল।

তিনি জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমে যাচ্ছিলো। উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি মানুষকে কঠিন অবস্থায় ফেলে দিয়েছিলো।, আর্থিক লেনদেনের ভারসাম্যও নেতিবাচক ছিল। তবে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল . বিলিয়ন ডলারের ঋণের দায় পরিশোধ করা। কোনোভাবে রিজার্ভে হাত না দিয়ে সরকার এই পরিমাণ ঋণ কমিয়ে ৪০০-৫০০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে এনেছে। এখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে সরকার তিনটি প্রধান পদক্ষেপ নিয়েছে:
. খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি
2. ব্যবসার জন্য নিরবচ্ছিন্ন নগদ প্রবাহ নিশ্চিত করা
3. কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (ADP) পুনর্বিন্যাস

অর্থ উপদেষ্টা জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকিং খাতের অবস্থা এতটাই নাজুক ছিল যে, অনেকের মনে ভয় ছিল, যেকোনো সময় ব্যাংকগুলোতে অর্থের সংকট দেখা দিতে পারে। কিছু ব্যক্তি মিলে ব্যাংকের অর্থ অপব্যবহার করেছে, যা বিশ্বে বিরল ঘটনা। তবে ইসলামী ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকসহ কিছু ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ২০,০০০ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে, যার ফলে এখন গ্রাহকরা সহজেই তাদের টাকা তুলতে পারছেন।

দেশে ঋণখেলাপির পরিমাণ বাড়ছে, কারণ মামলা নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগছে। বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিশেষ বিচারিক বেঞ্চ গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান অর্থ উপদেষ্টা।

সরকার কালো টাকা বৈধ করার সুযোগ বন্ধ করলেও এখনও কিছু উপায়ে এই প্রবাহ চলছে। বিশেষ করে, সম্পত্তির প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম দামে রেজিস্ট্রেশন করে বাকি অর্থ গোপনে ব্যবহার করা হয়। ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন সরকারি প্রকল্পের দুর্নীতি বন্ধ করাও বড় চ্যালেঞ্জ। পুরনো দুর্নীতিবাজরা নতুন নামে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যা পরিবর্তন করা কঠিন। তবে সরকার এটি ঠেকাতে চেষ্টা করছে।

মাননীয় উপদেষ্টা বলেছেন বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত অনেক কম বলে। তাই কর ব্যবস্থা পৃথকীকরণ এবং অবৈধ সুযোগ সুবিধা বন্ধে বেশ কয়েকটি বিধিবিধান (SRO) বাতিল করা হয়েছে।

স্বাক্ষাতকারে তিনি আরো জানান, উচ্চমূল্যের পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর (VAT) বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না। যেমন, ২০০ টাকা কেজির বেশি দামের বিস্কুটে ভ্যাট বাড়ানো যৌক্তিক।

তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকার গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে নতুন বড় প্রকল্প নেওয়া হবে না, বিদ্যমান মেগা প্রকল্পগুলো চালিয়ে যাওয়া হবে। বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট (ADP) প্রায় ৫০,০০০ কোটি টাকা কমানো হতে পারে।

তিনি ডেইরি স্টারকে জানান, বাজেট পরিবর্তন করা কঠিন হওয়ায় আগের সরকারের বাজেট বহাল রাখা হয়েছে। তবে সরকারি ব্যয় কমানো হয়েছে এবং শুধুমাত্র জরুরি খাতে ব্যয় অব্যাহত রাখা হয়েছে, যেমন পুলিশ বাহিনীর জন্য নতুন যানবাহন কেনা, যেহেতু তাদের ৩০০টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি অব্যাহত থাকবে, যাতে সাধারণ মানুষ ব্যবসায়ীরা সমস্যায় না পড়ে।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী বাজেটের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। যেমন:

. মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ
2. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা
3. জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা
4. কৃষিখাতকে শক্তিশালী করা

তিনি বলেন, আগামী বাজেট বাস্তবসম্মত হবে, তবে জনপ্রিয়তা রক্ষার জন্য নয়, বরং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য প্রস্তুত করা হবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না
নির্বাচিত সরকার ছাড়া চাঁদাবাজি ও মূল্যস্ফীতির সমাধান কঠিন
ভারত থেকে আসছে ১ লাখ ৩০ হাজার টন ডিজেল
12