logo
  • বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২

ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, সাময়িক বহিষ্কার

অনলাইন ডেস্ক
  ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪৭

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মুসলিম নারী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে সহপাঠীকে ধর্ষণের অভিযোগের খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে এবং চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

তবে পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণ অভিযোগের কোনো ভুক্তভোগী বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি। মামলাটি শুধুমাত্র ধর্ম ও নারী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শ্রীশান্ত “রেডিট” প্ল্যাটফর্মে “উইকলি সার্ভিস” নামে ছদ্মনামে ইসলাম ও মুসলিম নারী নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে এক পোস্টে সহপাঠীকে নেশাগ্রস্ত করে ধর্ষণের কথাও উল্লেখ করেন। নিজের দেওয়া কিছু তথ্যের সূত্র ধরে সহপাঠীরা তাঁকে শনাক্ত করেন। তবে তিনিই সেই পোস্টগুলোর লেখক কিনা, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই হয়নি।

চকবাজার থানার ওসি সৈয়দ আশরাফুজ্জামান জানান, বুয়েট কর্তৃপক্ষের মামলার ভিত্তিতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, শ্রীশান্তের মন্তব্য ইসলাম ধর্ম ও মুসলিম নারীদের প্রতি ঘৃণা ছড়িয়েছে এবং ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরি করেছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ তাঁর রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে, আর আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করেছে। শুনানি হবে আজ বৃহস্পতিবার।

মঙ্গলবার রাতে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে নামলে প্রশাসন প্রথমে তাঁকে পরিবারের জিম্মায় দিতে চায়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাতে রাজি না হয়ে পুলিশি উপস্থিতিতেও বিক্ষোভ চালিয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক একেএম মাসুদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে শ্রীশান্তকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট নেবে।”

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
বুয়েটের নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ ফেসবুকে লিখেছেন, “একটা ছেলে পাঁচ মাস ধরে দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করছে—এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও দায়িত্ব ব্যবস্থা নেওয়া।”

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রেডিটের পোস্টগুলোর প্রমাণ দেখানোর পর শ্রীশান্ত প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে কোনো জবাব দিতে পারেননি। তদন্তে দেখা যায়, তিনি ব্রাউজারের ইতিহাসও মুছে ফেলেছেন। ঘটনাটি নিয়ে এখন পুরো বুয়েট ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা তাঁর দ্রুত ও কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12