উপদেষ্টার গোড়ামিতেই সরকার প্রশ্নের মুখে

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার অযৌক্তিক ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের এই উপলব্ধিটা থাকা উচিত ছিলো যে তারা অন্তর্বর্তী সরকার। তারা এখানে দীর্ঘকাল থাকতে আসেনি। কাজেই এমন কিছু করবে না যাতে করে জনগণ নতুন সরকারকে দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে সন্দিহান হয়।”

শনিবার রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক-শোতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঘিরে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, “ইশরাক হোসেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকার লেজে গোবরে অবস্থা করে ফেলেছে। আমার এখনো মনে হয় এটা একজন উপদেষ্টার গোড়ামির কারণে হয়েছে। একজন উপদেষ্টার কারণেই পুরো সরকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।”

তিনি বলেন, “ইশরাক না নামলে কী হতো? অন্য কাউকে, এজাজ সাহেবকে এনে বসিয়ে দেওয়া হতো। প্রশ্ন হলো, কোন আইনে, কোন নিয়মে তিনি সেখানে? তিনি কি সরকারি কর্মকর্তা? আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কেউ? না, তিনি এক উপদেষ্টার ফুপাতো ভাই।”

এজাজকে নিয়ে দেওয়া এক সরকারি চিঠির প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কঠোর সমালোচনা করে মাসুদ কামাল বলেন, “তার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এজাজ একজন ‘যোগ্য ব্যক্তি’। আমি প্রশ্ন করি, আপনি জানলেন কবে? বয়স কত আপনার? এর মধ্যেই সব জেনে ফেললেন? আপনি কি মনে করেন, আপনার ইচ্ছেমতো দেশ চলবে?”

সরকারি চিঠির ভাষা ও কৌশল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “এটা আবার সেই পুরনো ‘শেখ হাসিনার আমলের’ মতোই শুরু হয়ে গেছে। মানুষ ভেবেছিল এবার কিছু বদলাবে, কিন্তু দেখছি একই ঘুণে খাওয়া ধারাবাহিকতা ফিরে এসেছে।”

টক-শোতে মাসুদ কামালের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে আগামী নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে।