‘সরকার কিছু দলকে পোষ্য বানিয়েছে, বাকিদের ঠেলে দিয়েছে বৈরী অবস্থানে’ রুমিন ফারহানা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং তারা কিছু দলকে নিজেদের পোষ্য বানিয়ে অলিখিতভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, আর বাকিদের ঠেলে দিয়েছে বৈরী অবস্থানে।
একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রুমিন বলেন, “এই সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি কমন প্ল্যাটফর্মে আনতে পারেনি। বিশেষ করে যে দলটি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল, যারা টানা ১৭ বছর ধরে নিপীড়নের মধ্যেও শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে—সেই বিএনপিকেই সরকারের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে।”
তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথমেই বলেছিলেন, এই সরকার আমাদের সরকার, একে ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সরকার যদি নিজেই নিজেকে ব্যর্থ করে, তাহলে আমাদের আর কী করার আছে? বাস্তবতা হলো, সরকার নিজেই নিজের পতনের পথ তৈরি করছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে রুমিন ফারহানা বলেন, “আওয়ামী লীগের পতনের পর মানুষ আশাবাদী ছিল—দলটির মূল অপরাধীরা বিচারের মুখোমুখি হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বরং নিরাপদে দেশ ছেড়ে চলে গেছে। শুধুমাত্র তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মীকে মামলা ও কারাগারে পাঠিয়ে বিচারপ্রক্রিয়ার মতো দেখানো হচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “যারা গুম, খুন ও নির্যাতনের মূল নির্দেশদাতা, যারা এসব অপরাধ তত্ত্বাবধান করেছে—তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।”
করিডর ইস্যুতে সরকারের অবস্থান নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। বলেন, “যে সরকার কেবল দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর কথা, তারা কীভাবে কৌশলগত ও সার্বভৌমত্ব-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে?”
সাক্ষাৎকারের শেষাংশে সংবিধান লঙ্ঘনের প্রসঙ্গ টেনে রুমিন বলেন, “সরকার এই সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছে। অথচ এই সংবিধানেই বলা আছে, দ্বৈত নাগরিকত্বধারী কেউ এমপি বা মন্ত্রী হতে পারেন না। একজন ব্যক্তিকে কেবল বাংলাদেশের নাগরিকই হতে হবে। কিন্তু এ বিধান লঙ্ঘন করে সরকার নিজেরাই অসাংবিধানিক কাজ করছে।”
মন্তব্য করুন