পাবনায় এনজিওর বাছুর বিতরণ বিতর্ক: শেষ পর্যন্ত হতদরিদ্র নারীদের হাতে পৌঁছেছে বাছুর

পাবনার চাটমোহরের মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে বাছুর বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক এবং সমালোচনার অবসান হয়েছে। তালিকাভুক্ত ১০ জন হতদরিদ্র নারী অবশেষে তাদের বাছুর বুঝে পেয়েছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর এনজিওটি চাটমোহরের মূলগ্রাম ইউনিয়নের বেজপাড়া গ্রামে বাছুর বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে। প্রশিক্ষণ শেষে নারীদের হাতে বাছুরের দড়ি ধরিয়ে একটি ফটোসেশন আয়োজন করা হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, ফটোসেশনের পর নারীদের বাছুর দেওয়া হয়নি। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি ভাইরাল হয়।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি জানান, ১৯৯৮ সালে নিবন্ধিত এ সংস্থা পাবনায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের নিয়ে কাজ করে আসছে। এছাড়া, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
এম এস আলম বাবলু বলেন, “বিশেষ অনুদানের মাধ্যমে চাটমোহর উপজেলার ১০ জন হতদরিদ্র নারীকে স্বাবলম্বী করতে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তিতে পাওয়া ৩ লাখ টাকায় ১০টি বাছুর কিনে প্রশিক্ষণ শেষে ৩০ ডিসেম্বর নারীদের বিতরণ করা হয়। তবে অতিরিক্ত কয়েকজন নারীর জন্য পরে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়।”
প্রতিবেশী এবং ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রশিক্ষণের দিন ফটোসেশন হলেও প্রকৃতপক্ষে ১৭ জানুয়ারির আগে কেউ বাছুর পাননি। বেজপাড়া গ্রামের সুফলভোগী কোহিনুর খাতুন জানান, “প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৩০ ডিসেম্বর। কিন্তু আমরা বাছুর পেয়েছি ১৭ জানুয়ারির রাতে।” স্থানীয় ভ্যানচালক মোফাজ্জল হোসেন কাজলও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বেশ কয়েকজন সুফলভোগী নারী বাছুর পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তাদের কেউ কেউ জানান, বিতরণে দেরি হওয়ায় অসন্তোষ দেখা দেয়। সুলতানা পারভীন, রাশিদা খাতুন, এবং জীবন নাহার বলেন, ৩০ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণের দিনই আমাদের হাতে বাছুর তুলে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
তালিকাভুক্ত নারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাছুর পৌঁছে দেওয়ার পর বিতর্কের অবসান ঘটেছে। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, এনজিওটির কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এখন দেখার বিষয়, বিতর্কের পর এ ধরনের প্রকল্পগুলো নিয়ে এনজিও এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়।
জাগতিক /এসআই
মন্তব্য করুন