জুলাই অভ্যুত্থানে ভুয়া শহীদ পরিবার-আহত দাবি করলে ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহতদের নামে প্রতারণা করে সুযোগ-সুবিধা নিলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। নতুন করে জারি করা এক অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এমন অপরাধে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রকাশিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এ এই বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর আগে গত ১৫ মে উপদেষ্টা পরিষদ এ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দিয়েছিল।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারা অনুযায়ী, যদি কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য দিয়ে কিংবা বিভ্রান্তিকর কাগজপত্র জমা দিয়ে নিজেকে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে দাবি করে সরকারি চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা গ্রহণ করেন, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর শাস্তি হিসেবে:

সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড, এবং

দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা

প্রাপ্ত সুবিধার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠা করা, ইতিহাস সংরক্ষণ, এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন ও কল্যাণ নিশ্চিত করতেই এই আইন জারি করা হয়েছে।

চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সংসদ বিলুপ্ত থাকায় সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি নিজ ক্ষমতাবলে অধ্যাদেশটি জারি করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আইন একদিকে যেমন ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সম্মানজনক স্বীকৃতি দিতে পারে, অন্যদিকে তেমনি অপব্যবহার ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এখন দেখার বিষয়, বাস্তবে এর প্রয়োগ কতটা স্বচ্ছ ও কার্যকর হয়।