logo
  • শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৪৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা

অনলাইন ডেস্ক
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৮
ছবি: সংগৃহীত

গ্রাহকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি’র চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরীসহ ৪৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মুর্তুজা আলী এই মামলার আবেদন করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ইস্টার্ন ব্যাংকে তার এফডিআর (স্থায়ী আমানত) এবং সঞ্চয়ী হিসাবে থাকা ১১ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে। মামলার আবেদনটি গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে করা হয়।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল বিন মঞ্জুর তামিম বলেন, "মুর্তুজা আলী ব্যাংকে ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা এফডিআর এবং ৫০ লাখ টাকা সঞ্চয়ী হিসাবে জমা রাখেন। পরে দেখা যায়, ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিভিন্ন ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।"

অভিযোগে বলা হয়েছে, ব্যাংকের কর্মকর্তারা মুর্তুজা আলীর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। এসব অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা এফডিআর-এর বিপরীতে ঋণ নেয়, যা বাদী জানতেন না। ২০১৯ সালে বিদেশে থাকার সময় তিনি এই জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারেন।

তার অভিযোগ অনুযায়ী, ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৭ টাকা লেনদেন করে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।

অভিযুক্তদের তালিকা

মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন:

চেয়ারম্যান: মো. শওকত আলী চৌধুরী

ব্যবস্থাপনা পরিচালক: আলী রেজা ইফতেখার

পরিচালকবৃন্দ: এম গাজিউল হক, সেলিনা আলি, আনিস আহমেদ, মুফাক্কারুল ইসলাম খসরু, গাজী মো. সাখাওয়াত হোসাইন, কে জে এস বানু, জারা নামরীন, ড. তাওফিক আহমেদ চৌধুরী, রুসলান নাসির, কে এম তানজিব উল হক, খন্দকার আতিক-ই রাব্বানী, মাহরীন নাসির

উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা: অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী জামান, রিয়াদ মাহমুদ চৌধুরী, এম খোরশেদ আনোয়ার, মাহমুদুন নবী চৌধুরী, এম খোরশেদ আলম, মহিউদ্দিন আহমদ

অন্যান্য কর্মকর্তা: ইউনিট হেড মো. ওবাইদুল ইসলাম, মাহদিয়ার রহমান, মো. মাইনুল হাসান ফয়সাল, ট্রানজেকশন ব্যাংকিং হেড মো. জাবেদুল আলম, হেড অব কর্পোরেট বিজনেস সঞ্জয় দাশসহ আরও অনেকে।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, “২০১৭ সালে বাদী তার সঞ্চয়ী হিসাবে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা জমা করেন। পরে ২০১৭-১৮ সালে তিনি ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার ছয়টি এফডিআর খুলেছিলেন। ২০১৯ সালে বিদেশে থাকার সময় তিনি জানতে পারেন, তার নামে দুইটি জাল সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট এবং চারটি জাল ঋণ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এতে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।”

এ ব্যাপারে ইস্টার্ন ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরী দেশের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তিনি চট্টগ্রামে ‘ডিসকো শওকত’ নামে পরিচিত। তিনি ফিনলে প্রপার্টিজের পরিচালক ও অংশীদার হিসেবেও যুক্ত রয়েছেন।

এই মামলার তদন্তের পর সিআইডি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাগতিক /এস আই

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
চট্টগ্রাম বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ডেনমার্ক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদের আগে যানজট, ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ জটলা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ নৌ রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরি সার্ভিসের উদ্বোধন করা হবে আজ
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
12