logo
  • শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

ট্রাম্পের শুল্কের পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত কানাডা

অনলাইন ডেস্ক
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪
ছবি: সংগৃহীত

কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের যে ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দিয়েছিলেন, সেটি আজ শনিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ও কঠোর জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে ট্রুডো বলেন, "কানাডা চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা যথাযথ ও জোরালো প্রতিক্রিয়া দেব।" তিনি আরও বলেন, দেশটির অর্থনীতি ও জনগণের স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তার সরকার।

এক টেলিভিশন মন্তব্যে ট্রুডো স্পষ্ট করে বলেন, "আমরা এই বাণিজ্যিক সংঘাত চাই না। কিন্তু ট্রাম্প যদি এগিয়ে যান, আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। আমাদের টেবিলে সব বিকল্প উন্মুক্ত রয়েছে।"

যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা পণ্যের প্রায় ৭৫ শতাংশই কানাডা থেকে আসে। ফলে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির কারণে দেশটির অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে কানাডার অটোমোবাইল, ইস্পাত, কৃষিপণ্য ও অন্যান্য শিল্পের ওপর বড় ধাক্কা আসার আশঙ্কা রয়েছে।

ট্রুডো তার ভাষণে নাগরিকদের সতর্ক করে বলেন, "আমি রাখঢাক করব না। সামনের দিনগুলোতে আমাদের জন্য বেশ কঠিন সময় আসতে পারে।"

নতুন শুল্ক নীতির আওতায় কানাডার তেল আমদানিও পড়বে কিনা, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, যদি তেলের ওপরও এই শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে এটি কানাডার জ্বালানি খাতের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার নীতিনির্ধারকরা পাল্টা ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কের জবাবে ঠিক কী ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে অটোয়া একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে। তবে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কানাডা মার্কিন কৃষিপণ্য, প্রযুক্তি পণ্য এবং অন্যান্য খাতের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে। এছাড়া দেশটি মার্কিন কোম্পানিগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক পদক্ষেপও বিবেচনা করতে পারে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই শুল্ক নীতির উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা। তবে এটি বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি শুধু কানাডার জন্য নয়, বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, "এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে এবং ভবিষ্যতে বাণিজ্য চুক্তিগুলো আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।"

কানাডা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার (WTO) কাছে এই ইস্যুতে অভিযোগ করার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির প্রতিক্রিয়ায় কানাডা ঠিক কী পদক্ষেপ নেয় এবং সেটি দুই দেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলে।

জাগতিক/এসআই

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
কানাডায় নির্বাচন শেষে ভোট গণনা চলছে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত
এবার বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আসছেন কানাডা জাতীয় দলের সামিত
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান আগামী শনিবার একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে ‘সরাসরি আলোচনা’ করবে
12