জুয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগে তুরস্কে ১৪৯ রেফারি বরখাস্ত

পেশাদার ফুটবল লিগে জুয়া কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় ১৪৯ জন রেফারি ও সহকারী রেফারিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)। শুক্রবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফেডারেশন জানায়, শৃঙ্খলা কমিটি এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৮ থেকে ১২ মাসের নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে এসব রেফারির বিরুদ্ধে তুরস্কের পেশাদার ফুটবল লিগে বাজি ধরার অভিযোগ ওঠে। টিএফএফ জানায়, অভিযুক্ত আরও তিনজন রেফারির বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলছে।

ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কের লিগগুলোতে মোট ৫৭১ জন রেফারির বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে ৩৭১ জনের বেটিং অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে এবং ১৫২ জন রেফারি সরাসরি জুয়ার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে ২২ জন—৭ জন প্রধান রেফারি ও ১৫ জন সহকারী রেফারি—দেশের শীর্ষ লিগে ম্যাচ পরিচালনা করতেন।

টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানোগ্লু বলেন, “তুর্কি ফুটবলের সুনাম গড়ে উঠেছে মাঠের নিষ্ঠা ও ন্যায়ের প্রতি বিশ্বাসের ওপর। এই মূল্যবোধের সঙ্গে বেইমানি শুধু নিয়মভঙ্গ নয়, এটি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।”

তিনি জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে অন্তত ১০ জন রেফারি গত পাঁচ বছরে ১০ হাজারের বেশি ম্যাচে বাজি ধরেছেন। একজন রেফারি ১৮ হাজার ২২৭টি ম্যাচে বাজি ধরেছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এছাড়া ৪২ জন রেফারি অন্তত এক হাজারের বেশি ম্যাচে বাজি ধরেছেন।

তবে কেউ নিজেদের পরিচালিত ম্যাচে বাজি ধরেছেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। বিষয়টি নিয়ে ইস্তাম্বুলের সরকারি কৌঁসুলির কার্যালয় থেকে পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে।

হাজিওসমানোগ্লু বলেন, “সাম্প্রতিক তদন্তে দেখা গেছে, কিছু রেফারি এমনভাবে জুয়ায় জড়িয়েছেন যা ফুটবলের চেতনা ও ন্যায়ের মূল ভিত্তিকে ধ্বংস করছে। এটি কেবল নিয়ম লঙ্ঘন নয়—এটি বিবেকবিরোধী কাজ।”

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম হাবেরতুর্ক জানিয়েছে, রেফারিদের পাশাপাশি কিছু ক্লাব ও ফুটবলারদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। প্রায় ৩ হাজার ৭০০ খেলোয়াড়কে এই তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।