logo
  • রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২

জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ নেই: সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:২৬

জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির (আরডব্লিউপিবি) সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজনদের ঐকমত্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, কিন্তু সংবিধান সংশোধনের জন্য জনগণের অনুমোদন অপরিহার্য। এর বাইরে কোনো আদেশ বা অধ্যাদেশ দিয়ে সংবিধান সংশোধনের চেষ্টা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।”

সাইফুল হক সতর্ক করে বলেন, “রাষ্ট্রপতির নামে কোনো আদেশ জারি হলে এবং তা অনুমোদিত হলে ভবিষ্যতে কেউ তা অপব্যবহার করতে পারে। তাই সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ জনগণের ম্যান্ডেট ব্যতীত সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এই ধরনের কোনো ক্ষমতা বা এখতিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। এ উদ্যোগ সংবিধান অস্বীকারের সামিল।”

গণভোট প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বলেন, “গণভোট নিয়ে অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। নানা প্রশ্ন উঠবে, এতে ঝুঁকি রয়েছে। তাই নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন করা উচিত, আলাদা দিনে নয়।”

তিনি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের যতটুকু এখতিয়ার, তারা ততটুকুই করুক। সবাই যেহেতু গণভোটে একমত, সরকার চাইলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে আয়োজন করতে পারে। ভুল হলে তার দায় সবাইকে নিতে হবে।”

সাইফুল হক আরও বলেন, “সরকার এখনো তার নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি। আমরা নানা প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু তা গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিতর্কিত উপদেষ্টাদের নিয়েই সরকার চলছে—তাদের বিষয়ে সরকার প্রধানের সিদ্ধান্ত এখন দেখার অপেক্ষা।”

তিনি বলেন, “দেশে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হলে দ্রুত রাজনৈতিক সংস্কার ও জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি।”

দীর্ঘদিনের কর্তৃত্ববাদী শাসনের ফলে ভোটাধিকার হারানো ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হওয়ার কথা তুলে ধরে সাইফুল হক বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারকে পক্ষপাতমুক্ত থেকে ইতিবাচক ভূমিকা নিতে হবে।”

তিনি রাজনৈতিক দল, সিভিল সমাজ ও নাগরিকদের একত্রে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিক সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12