সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতে ইসলামী’র ১৮ দফা প্রস্তাব
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে ১৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রস্তাবে বলেছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হলে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ জারির পর আগামী নভেম্বরে গণভোট আয়োজন করতে হবে। দলটি আরও প্রস্তাব দেয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি রাজনৈতিক দল যেন নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচন করতে পারে— এই বিধান বহাল রাখতে হবে।
জামায়াতের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে শতভাগ নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনী কাজে যুক্ত প্রিজাইডিং, পোলিং, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগেও পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার দাবি জানানো হয়।
এছাড়া, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্য নিয়োগ, বুথে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, এবং বিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানায় দলটি। মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের (ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি) নিয়োগ লটারির মাধ্যমে করার প্রস্তাবও দিয়েছে তারা।
জামায়াতের প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচনের কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে থেকে সামরিক বাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের কঠোর অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনী এলাকায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দমন ও ভোটারদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের নিশ্চয়তা চেয়েছে দলটি।
দলটির দাবি, ভোটার তালিকায় যেসব ভোটারের ছবি অস্পষ্ট রয়েছে, তা সংশোধন করে চিত্রসহ তালিকা সময়মতো পোলিং এজেন্টদের হাতে দিতে হবে। এছাড়া প্রবাসী ভোটারদের ভোটদান প্রক্রিয়া সহজীকরণ করে তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করার সুপারিশ করেছে জামায়াত। একইসঙ্গে অতীতে পরিবর্তিত বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
জামায়াতে ইসলামী বলেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকল দলের জন্য সমান সুযোগ ও সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নির্বাচনী প্রতিযোগিতা ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ হয়।
বৈঠক শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের প্রস্তাবগুলো পেশ করেছি। আশা করি, ইসি সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করবে।”
মন্তব্য করুন





