পারমাণবিক সুপার টর্পেডো ‘পোসেইডন’-এর সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি রাশিয়ার
রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ও স্বয়ংক্রিয় সুপার টর্পেডো ‘পোসেইডন’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার তিনি নিজেই এই পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুতিন বলেন, “রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন একটি স্বয়ংক্রিয় পোসেইডন সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালিয়েছে এবং এটি দুর্দান্ত এক সাফল্য।”
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পোসেইডন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে খুব একটা জানা যায় না। ধারণা করা হয়, এটি এমন এক স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক টর্পেডো যা তেজস্ক্রিয় সুনামি বা ভয়াবহ সমুদ্র ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় শহরগুলোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে সক্ষম।
ইউক্রেন যুদ্ধে আহত রুশ সেনাদের সঙ্গে মস্কোর এক হাসপাতালে চা পান করার সময় পুতিন বলেন, মঙ্গলবার এই পরীক্ষাটি পরিচালনা করা হয়। তিনি জানান, “প্রথমবারের মতো আমরা শুধু বাহক সাবমেরিন থেকে টর্পেডোটি উৎক্ষেপণ করতেই সক্ষম হইনি, বরং এর পারমাণবিক ইউনিটও সক্রিয় করেছি, যা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কার্যকর ছিল।”
রুশ প্রেসিডেন্টের দাবি, “এই অস্ত্রের মতো কিছু পৃথিবীতে নেই। পোসেইডনের শক্তি আমাদের সবচেয়ে উন্নত সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও বেশি।”
এর এক সপ্তাহ আগে রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষারও দাবি করে। এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যেকোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম বলে পুতিন জানান।
২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো ‘পোসেইডন’ ও ‘বুরেভেস্তনিক’ অস্ত্রের ঘোষণা দেন পুতিন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা উদ্যোগ, ন্যাটো সম্প্রসারণ এবং ২০০১ সালে ওয়াশিংটনের একতরফা সিদ্ধান্তে ১৯৭২ সালের অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে সরে আসার প্রতিক্রিয়াতেই রাশিয়া এসব অস্ত্র তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে পুতিন স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে রাশিয়ার পারমাণবিক বাহিনীর মহড়া তত্ত্বাবধান করেন। তিনি দাবি করেন, “আমাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ শক্তির আধুনিকায়ন এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে।”
বর্তমানে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের প্রায় ৮৭ শতাংশ রয়েছে। ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস (এফএএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার হাতে আছে ৫ হাজার ৪৫৯টি এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৫ হাজার ১৭৭টি পারমাণবিক ওয়ারহেড।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স
মন্তব্য করুন





