মিলবে মানবিক সহায়তা
ফের খুলছে গাজার রাফা সীমান্ত
গাজার একমাত্র আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার রাফা সীমান্ত ক্রসিং অবশেষে খুলতে যাচ্ছে। ইসরায়েলের দখলে থাকা ফিলিস্তিনি পাশে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা এই সীমান্ত আবার চালু করতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল, হামাস ও মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার পর। ফলে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং আহতদের স্থানান্তরের পথ খুলে যাবে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও হামাসের এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় চতুর্থ দফার বন্দি ও জিম্মি বিনিময়ের পর শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। গত বছরের মে মাসে ইসরায়েল রাফার ফিলিস্তিনি পাশ দখল করে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বারবার সীমান্ত খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।
হামাসের সূত্র জানিয়েছে, গাজার আহত ও অসুস্থ ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসার জন্য মিশরে পাঠানো হবে। এটি যুদ্ধবিরতির গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলোর একটি, যা ত্রাণ কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার প্রথম দফায় অসুস্থ ব্যক্তিদের একটি দল চিকিৎসার জন্য মিশরে পাঠানো হবে। মানবিক সংকট লাঘবে এই সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ঘোষণা দিয়েছে, তারা রাফা সীমান্তে তাদের পর্যবেক্ষণ মিশন পুনরায় চালু করবে। এই মিশনে ১৮ জন ইউরোপীয় ও স্থানীয় কর্মকর্তা থাকবেন এবং ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সের নিরাপত্তা দল সহায়তা করবে।
ইতালির সরকার জানিয়েছে, প্রতিদিন ৩০০ জন আহত ও অসুস্থ ফিলিস্তিনিকে মিশরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে কাজ করবে এই মিশন।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে, আর বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে।
এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ১৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন:
ইয়ারদেন বিবাস (ইসরায়েলি নাগরিক)
কিথ সিগেল (মার্কিন নাগরিক)
ওফের কালদেরন (ফরাসি নাগরিক)
এর বিনিময়ে ইসরায়েল ৯০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে ৯ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।
গাজার রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক চাপ ও মানবিক সংকট মোকাবিলার প্রয়োজনে নেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহ, চিকিৎসা সহায়তা এবং আহতদের স্থানান্তরের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়িত করতে হলে ইসরায়েল ও হামাসকে আলোচনার মাধ্যমে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। রাফা সীমান্ত পুনরায় চালু হওয়া গাজার মানবিক সংকট কিছুটা কমালেও পুরোপুরি সমাধান হবে কি না, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর।
জাগতিক /এস আই
মন্তব্য করুন



