নগ্নতা, প্লাস্টিক সার্জারি থেকে বিজ্ঞাপন, বারবার বিতর্কে সিডনি সুইনি
হলিউডের তরুণ তারকা সিডনি সুইনি যেন সবসময়ই আলোচনায়। কখনো পর্দায় সাহসী দৃশ্য, কখনো বিজ্ঞাপন, আবার কখনো নিজের শরীর বা জীবনযাপন নিয়ে মন্তব্য—সব মিলিয়ে বারবার বিতর্কের কেন্দ্রে এই অভিনেত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন সিনেমা ‘ক্রিস্টি’–র প্রচারণা নিয়ে মার্কিন সাময়িকী ভ্যারাইটি–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন নিজের ক্যারিয়ার, সমালোচনা ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে।
দশ বছরের ক্যারিয়ার হলেও সিডনি সুইনি আলোচনায় আসেন এইচবিওর বহুল জনপ্রিয় সিরিজ ‘ইউফোরিয়া’–এর মাধ্যমে। সেই সিরিজই তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপর ‘দ্য হোয়াইট লোটাস’–এ অভিনয় করে জনপ্রিয়তা আরও বাড়ান তিনি। তবে তাঁর পর্দার চরিত্র, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ছবি, কিংবা মন্তব্য—সবই অনেক সময় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সিডনি বলেন, “আগে ভাবতাম আমি কোথায় যাচ্ছি, এখন জানি আমি কী করছি। নিজের শক্তির জায়গা বুঝে আত্মবিশ্বাসী হয়েছি। জ্ঞানই আসল শক্তি, আর সেটাই আমাকে বদলে দিয়েছে।”
‘ইউফোরিয়া’ ও ‘দ্য হোয়াইট লোটাস’–এ তাঁর নগ্ন দৃশ্য নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলেও সিডনি এতে বিচলিত নন। ডেডলাইন–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি একজন অভিনেত্রী, বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ই আমার কাজ। যত সমালোচনাই হোক, চরিত্রের প্রয়োজনে আমি এমন দৃশ্য করব।”
তিনি আরও বলেন, কৈশোর থেকেই চেষ্টা করেছেন যেন মানুষ তাঁর শরীর নয়, তাঁর কাজ নিয়ে কথা বলে—“আমি স্কুলে খেলাধুলা ও পড়াশোনায় মন দিয়েছি, যাতে কেউ ভাবতে না পারে আমি শুধু শরীরসর্বস্ব।”
সম্প্রতি আমেরিকান পোশাক ব্র্যান্ড আমেরিকান ইগল–এর একটি বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখে পড়েন সিডনি। বিজ্ঞাপনে তিনি বলেন, “জিনস মা–বাবার কাছ থেকে আসে, যা চুল, চোখের রং বা ব্যক্তিত্ব নির্ধারণ করে। আমার জিনসের রং নীল।”
‘Genes’ এবং ‘Jeans’ শব্দের এই খেলা বর্ণবাদ ও সৌন্দর্যের মানদণ্ড নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে। অনেকে বিজ্ঞাপনটিকে আপত্তিকর বলেন, আবার অনেকেই সমালোচনাকে বাড়াবাড়ি বলে উড়িয়ে দেন।
আসছে ৭ নভেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘ক্রিস্টি’। ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন কিংবদন্তি নারী বক্সার ক্রিস্টি মার্টিনের চরিত্রে। এই চরিত্রের জন্য সিডনি বাড়িয়েছেন ৩০ পাউন্ড পেশি এবং কঠিন শারীরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
পরিচালক ডেভিড মিচোড বলেন, “অনেকে ভাবেন সিডনি শুধু আবেদনময় চরিত্রেই মানানসই, কিন্তু ‘রিয়েলিটি’ সিনেমা দেখেই আমি তাঁর ভেতরের প্রকৃত অভিনেত্রীকে চিনেছি।”
সিডনি বলেন, “আমি এমন চরিত্রে অভিনয় করতে ভালোবাসি, যা দর্শক প্রথমে পছন্দ করে না। কিন্তু শেষে যেন সেই চরিত্রের প্রতি সহানুভূতি জন্মায়।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে বহু জল্পনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিডনি বলেন, “আমি ইনজেকশন, ট্যাটু—কিছুই করিনি। আমাকে যেমন দেখায়, সেটাই আমি। বয়স বাড়লে যেমন দেখাব, তাতেই খুশি।”
‘ইউফোরিয়া’র তৃতীয় মৌসুমের কাজ শেষ করতে চলেছেন সিডনি। এদিকে জোর গুঞ্জন—তিনি নাকি হতে যাচ্ছেন নতুন বন্ড গার্ল। তবে এ প্রসঙ্গে তিনি হেসে বলেন, “এটা এখনো গুজব। কিন্তু সত্যিই যদি এমন হয়, দারুণ লাগবে।”
সিডনি সুইনি আজকের হলিউডের এমন এক মুখ, যিনি একই সঙ্গে প্রতিভা ও বিতর্কে আলোচিত। তাঁর নিজের ভাষায়, “আমি যা করি, তা মন থেকে করি। যদি মানুষ আমাকে বুঝতে না পারে, তবু আমি থামব না।”
মন্তব্য করুন

